প্রকাশ : ১৬ এপ্রিল ২০২২, ২১:১১
ফরিদগঞ্জের বাগপুরে মহিলার মিথ্যা মামলায় মসজিদের কাজ বন্ধের অভিযোগ
অসংখ্য মিথ্যা মামলার বাদী এক মামলাবাজ মহিলার মিথ্যা মামলার কারণে ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান মসজিদের উন্নয়ন মূলক কাজ বন্ধ ও এলাকার সুশীল সমাজের কয়েকজনকে ওই মিথ্যা মামলায় জড়িয়ে হয়রানির অভিযোগ পাওয়া গেছে।
|আরো খবর
ঘটনাটি ঘটেছে চাঁদপুর জেলার ফরিদগঞ্জ উপজেলার ৩ নং সুবিদপুর ইউনিয়নের বাগপুর গ্রামে। অভিযোগের আলোকে গত শুক্রবার জুমার নামাজের সময় ওই মসজিদে গেলে বাগপুর কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের মুসল্লিরা ওই মিথ্যা মামলার বাদী মামলাবাজ মোবাশ্বেরা বেগম, স্বামী মৃত রুস্তম আলী পাটোয়ারীর বিরুদ্ধে বিভিন্ন রকম বিষোদগার করতে দেখা গেছে।
মামলাবাজ মোবাশ্বেরা বেগমের বিষয়ে বলতে গিয়ে বাগপুর কেন্দ্রীয় মসজিদের খতিব (যিনি গত ৩৮ বছর ওই মসজিদের দায়িত্বরত খতিব) মাওলানা আজিজুর রহমান বলেন মোবাশ্বেরা মসজিদের বিরুদ্ধে এবং যাদের বিরুদ্ধে মামলাটি করেছেন তাহা সম্পূর্ণরূপে মিথ্যা।
মসজিদের এ সম্পত্তি মসজিদের ওয়াফকো সম্পত্তি। গত ৩৮ বছর এই সম্পত্তি মসজিদের দখলে। কিন্তু মোবাশ্বেরা বেগম কোন সূত্রে দাবি করছে তা আমার বোধগম্য নয়। অন্যদিকে এলাকার জামাল বেপারী জানান, এই মহিলা এলাকার একটা মামলাবাজ। তিনি ঢাকায় থাকেন, সেখান থেকে তিনি বিভিন্ন জনের নামে মিথ্যা মামলা করে হয়রানি করে এলাকার শান্তি নষ্ট করছেন। মসজিদ আল্লাহর ঘর সেই মসজিদের ওয়াফকো সম্পত্তির উপর মিথ্যা মামলা করে কাজ বন্ধ করে রেখেছেন। আমরা ওই মামলাবাজ মহিলার বিচার চাই। মসজিদের দীর্ঘদিনের সাধারণ সম্পাদক হারুন পাটোয়ারী ও মসজিদের দীর্ঘদিনের সহ: ক্যাশিয়ার আব্দুল আজিজ বলেন, মামলাবাজ মোবাশ্বেরা বেগম মসজিদের উন্নয়ন মূলক কাজের সম্পত্তিতে মামলা করে যে বাধা প্রদান করেছেন তাঁরা সম্পূর্ণরূপে মিথ্যা, এবং হয়রানিমূলক মামলা। আমাদের এই মসজিদের বয়স প্রায় চল্লিশ বছর এবং এই সম্পত্তিগুলো মসজিদের ওয়াকফ সম্পত্তি। অন্যদিকে মসজিদের মুসল্লি ও এলাকার বয়জ্যেষ্ঠ নুরুল হুদা বেপারী, মোঃ নূরুল ইসলাম বেপারী, আবুল ফজল পাটোয়ারী, নুরুল ইসলাম, ইসমাইল সহ আরো অনেক মুসল্লি বলেন এ মহিলা একজন মামলাবাজ, তিনি ভালো মানুষ নয়, যদি ভাল হতেন তাহলে মসজিদের ওয়াফকো সম্পত্তির উপর মিথ্যা মামলা করে সাধারণ মানুষকে হয়রানি করতেন না। এছাড়া ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি কাওছার হোসেন অত্র ওয়ার্ডের মেম্বার নজরুল ইসলাম বলেন, ওই মহিলা ইতিপূর্বে কোর্টে এবং থানায় বিভিন্ন জনের বিরুদ্ধে বিভিন্ন রকম মিথ্যা মামলা দায়ের করেছেন। এবং সে মামলাগুলোর বিষয়ে থানায় এবং কোর্টে একাধিকবার তারিখ করলেও তিনি মামলার বাদী হয়ে নিজেই উপস্থিত হতেন না। এতে করে থানার ওসি ও এসআই বিব্রত বোধ করেছেন। তিনি একজন মামলাবাজ আমরা তার হয়রানি থেকে রেহাই পেতে চাই।
অন্যদিকের মসজিদের দাতা হাসান পাটোয়ারী বলেন মসজিদের সম্পত্তির উপর মোবাশ্বেরা বেগমের মামলা মোতাবেক বিজ্ঞ আদালতের দরখাস্ত মামলা নং ৪৫৬/২০২২ ইং ধারা- ১৪৫ফৌঃ কাঃ বিঃ এবং স্মারক নং ১৪০৬(৪) তারিখ- ১১/০৪/২২ইং মামলা করে। কিন্তু মসজিদের সাব কাবলা মূলে মোট ৯% সম্পত্তি। আব্দুল মতিন সাব কাবলা দলিল মূলে দেয়, যার দলিল নং ৮৩৬৮/২৩-১০-৮৪ সালে দেয় ৭ শতাংশ। হাসান পাটোয়ারী সাব কবলা দলিল মূলে দেয় ২% দলিল নং ২৯৫৭/০৪-০৪-২০২১। হাসান পাটোয়ারী আরো বলেন, মোবাশ্বেরা বেগম বাড়িতে সব মিলিয়ে হয়তো ২% সম্পত্তি পাবে। কিন্তু, তিনি আমাদের ১০ থেকে ১২ শতাংশ সম্পত্তি ভোগ দখল করে আছে। তিনি ইতিপূর্বে এলাকার অনেকের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা করে হয়রানি করেছেন। তার অসংখ্য মিথ্যা মামলায় অনেককে থানায় এবং কোর্টে হাজির করে হয়রানি করেছেন। কিন্তু তিনি বাদী হয়ে কখনো থানায় এবং কোর্টে হাজির হননি। তিনি মামলার বাদী হয়ে উপস্থিত হতেন না, এসব নিয়ে থানার ওসি ও এসআই একাধিকবার বিব্রত বোধ করেছেন বলে হাসান পাটোয়ারী বলেন।
মোবাশ্বেরা বেগম ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান মসজিদের উন্নয়নমূলক কাজের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়ে কেন এত ছিনিমিনি খেলছেন আমরা এর সঠিক সমাধান চাই।বর্তমানে তার মিথ্যা মামলার কারণে, আদালত মসজিদের চলমান কাজ বন্ধ করে দেওয়ায় রড সিমেন্ট ও অন্যান্য সামগ্রী নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।
মোবাইল ফোনের মাধ্যমে একাধিকবার মোবাশ্বেরা বেগমের সাথে যোগাযোগ করতে চাইলেও তাকে পাওয়া যায়নি।